প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বানী
মাটির সাথে এ দেশের মানুষের নারীর সম্পর্ক। এক খন্ড জমি বাংলাদেশের মানুষের কত আপন তা জমি-জমার সাথে সংশ্লিষ্ট ও ভুক্তভোগী মাত্রই অবগত আছেন। ব্রিটিশ ভূ-ভারতের সময়কাল হতে জমি-জমা সম্পর্কিত আবেগ-অনুভূতি ঐতিহাসিকভাবে আরো ঘনীভূত হয়েছে। জমিদারি প্রথা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, মধ্যস্বত্বভোগীদের নিপীড়ন, নীলচাষ....এ শব্দগুলির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। বাংলার ইতিহাসের পরিক্রমায় সাধারণ মানুষের জমি-জমা নিয়ে বঞ্চনা, দুর্ভোগ আজ কালোত্তীর্ণ বিভিন্ন শব্দমালায় উপন্যাস কিংবা কবিতার অক্ষরে লিপিবদ্ধ। ১৮৮৫ সালের বেঙ্গল টেন্যান্সি অ্যাক্টের মধ্যে দিয়ে প্রজা হিসেবে স্বীকৃতি লাভের মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষের জমির উপর স্বত্বপ্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ পার হলেও ১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন পর্যন্ত সাধারণ জনগণকে অপেক্ষা করতে হয়েছে নিপীড়ণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ প্রণয়ণের মাধ্যমে রায়তি প্রজাগণ জমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন যদিও সরকারই প্রকৃতপক্ষে সকল জমির নিরঙ্কুশ মালিক। তবে বিগত প্রায় ছয় দশকে ভূমি ব্যবস্থাপনা যতটা গতিশীল হবার কথা ততটা হয়েছে বলে মনে হয়না। এখনও মানুষ তার একখন্ড জমির মালিকানা হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য সরকারি দপ্তরে দিনের পর দিন সময় ব্যয় করে থাকেন। এ কথা অনস্বীকার্য যে, সাম্প্রতিক কালে সরকারের সদিচ্ছা এবং তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে অনেক সেবাই সহজলভ্য হয়ে গেছে, তবে তা কতটুকু জনপ্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট হয়েছে তা ভাববার বিষয়।
বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে যোগদানের পর ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরো কতটা যুগোপযোগী করা যায় তা বিবেচনা করা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে আমরা মনে করি। এর মধ্যে ভূমি অফিসে সর্বাধিক যে বিষয়গুলি মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে থাকে তা চিহ্নিত করতে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণত নামজারী মামলা অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রিতা, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ন প্রতিষ্ঠা, ভূমি অফিসের কিছু কর্মচারীর যোগসাজস, ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ও প্রদানে গাফিলতি ইত্যাদি বিষয়গুলি প্রধান। সেবা প্রদান বা সার্ভিস ডেলিভারিকে কীভাবে আরো জনগণের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাষক, ঢাকা মহোদয়ের নির্দেশ ক্রমে ভূমি অফিস, মতিঝিল সার্কেল প্রত্যেকটি নামজারী মামলা অনুমোদনের প্রতিটি পর্যায়ে সময় নির্ধারিতকরণ এবং তদনুযায়ী একটি ডেটাবেইজ সংরক্ষণ, অফিস ডিজিটাইজেশন, ইন্টারনেট সংযোগ, মোবাইলে এসএমএস-এর মাধ্যমে আবেদনকারীর নিজের মোবাইলে স্ট্যাটাস আপডেট জানানো এবং ওয়েবসাইটেও হালনাগাদ তথ্য প্রদানের জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বিগত ২ মাস যাবৎ এ বিষয়ে কাজ করে আমরা আজকে জনগণের কাছে তাদের প্রত্যাশার সেবাদানের একটি ধাপ অতিক্রম করছি।
সকলকে আমাদের এ কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত থেকে এ অফিস হতে সেবাগ্রহণ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
নোটিশ বোর্ড
গুরুত্বপূর্ন সেবা
অন্যান্য ই-সেবা